বাচ্চাদের চোখের প্রতি সামান্য উদাসীনতাও তাদের জন্য বড় ধরনের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে। বর্তমানে বাচ্চাদের চোখের সমস্যা একটি এলার্মিং বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই বিষয়ে নেয়া দরকার কিছুটা বাড়তি সতর্কতা।
আজ প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় জানানোর চেষ্টা করছি, যেগুলোর প্রতি খেয়াল রেখে নিজেদের বাচ্চার চোখকে রাখতে পারবেন সুরক্ষিত। এবং যাদের বাচ্চারা ইতিমধ্যে চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে, তাদের জন্যও বিষয়গুলো জানা যথেষ্ট জরুরী।
সার্বিক ক্ষেত্রে
সাধারণত দেখা যায়, বাচ্চাদের চোখে মাইনর কোন সমস্যা থাকলে তা লেখাপড়া শুরুর বা স্কুলে ভর্তির আগ পর্যন্ত বোঝা যায় না। স্কুলে যাওয়ার পর অনেক বাচ্চাদের কন্টিনিউ রেজাল্ট খারাপ হতে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্বল দৃষ্টিশক্তি এর জন্য দায়ী। তারা ঠিকভাবে ব্ল্যাকবোর্ড দেখতে পারেনা। আবার এটা যে তাদের চোখের সমস্যার জন্য হচ্ছে সেটাও বুঝতে পারে না। ফলে অভিভাবককে এ বিষয়ে কিছু বলতেও পারে না।
এই সমস্যা এড়াতে নিজের বাচ্চাকে স্কুলের ভর্তির আগে একজন ভালো প্রশিক্ষিত Eye-specialist দ্বারা চোখ পরীক্ষা করে নিন।
ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে
বর্তমান যুগে এসে যেহেতু ডিজিটাল স্ক্রিন থেকে বাচ্চাদের পুরোপুরি দূরে সরিয়ে রাখা সম্ভব নয়, সেহেতু প্রতিদিন তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দিন। তারা যেন দিনের কেবল সেই নির্দিষ্ট সময়টিতেই মোবাইল, ট্যাব বা কম্পিউটারের পিছনে ব্যয় করে সে বিষয়েও আপনাকেই নজর দিতে হবে
এ সম্পর্কে The American Academy of Ophthalmology বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী নিম্নলিখিত স্ক্রিন টাইম সাজেস্ট করেছেন:
- বয়স ২ বছর পর্যন্ত: একদমই ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।
- বয়স ২ থেকে ৫ বছর: সর্বোচ্চ ১ ঘন্টা।
- বয়স ৬ বছর বা তার অধিক: সর্বোচ্চ ২ ঘন্টা।
বাচ্চাদের জন্য চশমার ফ্রেম পারচেজ করার সময় তাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে পারেন। এতে করে চশমা পরার প্রতি তাদের অনীহা কাজ করবে না। ফ্রেমটি যেন তাদের মুখের সাথে সুন্দর ভাবে মানিয়ে যায় এবং সঠিকভাবে ফিট হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
বাচ্চাদের ফ্রেমগুলো হওয়া উচিত একদমই হালকা ওজনের এবং ফ্লেক্সিবল। সিলিকন ও টাইটেনিয়ামের ফ্রেম এক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। চাইনিজ অনেক ফ্রেমের সাথেই বর্তমানে ফ্রি প্রচলিত ব্লু-কাট লেন্স লাগানো থাকে। এগুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
লেন্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে
বাজারে বর্তমানে বহুল প্রচলিত চাইনিজ ব্লু-কার্ড বা ব্লু-ব্লক লেন্স। বাচ্চাদের কোন অবস্থাতেই এই সব লেন্স দেওয়া উচিত না। এতে করে চোখের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা দেখা দিতে পারে, এমনকি Myopia হওয়ারও সুযোগ থাকে।
আর যদি ব্লু-কার্ড লেন্স দিতেই হয় তবে ভালো মানের আন্তর্জাতিক কোন ব্র্যান্ডের ব্লু লাইট ফিল্টার লেন্স দেয়া যেতে পারে।
যেমন: Crizal Prevencia, Shamir Blue Zero বা ZEISS BlueProtect
এই সকল বিষয়ের পাশাপাশি প্রতিটা প্যারেন্টস এর খেয়াল রাখতে হবে তাদের বাচ্চারা যেন পরিষ্কার চশমা ব্যবহার করে। লেন্স পরিষ্কার করার জন্য নরম মাইক্রোফাইবার কাপড় ব্যবহার করতে হবে। শার্টের আস্তিন বা গেঞ্জি দিয়ে লেন্স কখনোই পরিষ্কার করা যাবে না। চশমা ধোঁয়ার জন্য মৃদু গরম পানি ব্যবহার করুন। লেন্স ক্লিন করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের অ্যালকোহল, গৃহস্থলীর পরিষ্কারক বা সাবান ব্যবহার করবেন না।
অথেনটিক সব আইকেয়ার প্রোডাক্ট পেতে ভিজিট করুন www.luxotix.com এ।